যে কোনো সময় যুক্তরাজ্যের ঐতিহ্যবাহী লন্ডন শহর ভূমিকম্পে আক্রান্ত হতে পারে। বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি সতর্ক করে বলেছেন, এতে মাটিতে মিশে যেতে পারে শহরের অধিকাংশ স্থাপনা।

গবেষকেরা আরও বলছেন, ভূগর্ভস্থ টেকটনিক প্লেটে বড় ধরণের ফাটলের সৃষ্টি হওয়ায় শহরটিকে ঘিরে ভূমিকম্পের এমন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ৫ ছাড়িয়ে যেতে পারে। এবং তা সত্যিই হলে শহরটিতে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দেবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম এক প্রতিবেদনে জানায়, সময়টা নির্দিস্ট করে বলা সম্ভব না হলেও আশঙ্কা জোড়ালো হয়েই দেখা দিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের একদল গবেষক সম্প্রতি এই তথ্য আবিষ্কার করেছেন। তারা বলছেন ভূমিকম্পের ফলে লন্ডনের মধ্যাঞ্চল এবং ক্যানারি ঘাট (Canary Wharf) সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। রিচার্ড এটাও জানান, যদি সত্যি সত্যিই ভূমিকম্প আঘাত হানে তবে তা ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ ঘটনা। তার মতে, ভূমিকম্পের মাত্রা ৫ বলে ধারণা করা হলেও প্রকৃতপক্ষে তা ৬ মাত্রাও ছাড়িয়ে যেতে পারে।

অবশ্য লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বলছেন, ভূগর্ভস্থ প্লেটে ফাটল দেখা গেলেও তাতে লন্ডনে ভূমিকম্পের আশঙ্কা খুবই কম। তাদের হিসেবে আশঙ্কার হার হাজারে এক শতাংশ। তারা আরও বলছেন, ভূগর্ভস্থ প্লেট খুবই ধীর গতিতে স্থানচ্যুত হচ্ছে। ফলে এর প্রভাবে ভূমিকম্পের আশঙ্কা দেখা দিলেও তা হতে অনেক সময় লেগে যাবে। তারা বলছেন স্থানচ্যুত হওয়ার গতি এতটাই ধীর যে, বছরে মাত্র এক থেকে দুই মিলিমিটার ঘটে থাকে।

তবে ইম্পেরিয়াল কলেজের বেসামরিক পরিবেশ বিষয়ক প্রকৌশলী ড. রিচার্ড গেইল জানান, গতি খুব ধীর মনে হলেও এর ভয়াবহতা কিন্তু মারাত্মক হতে পারে। কেননা ভূগর্ভস্থ প্লেটের কারণে যে স্থানগুলো আক্রান্ত হবে তা অত্যন্ত জনবহুল।

আসন্ন ভূমিকম্পের কথা মাথায় রেখে তাই পরবর্তীতে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা বজায় রাখার পরামর্শও দিচ্ছেন রিচার্ড। মূলত ভবনের গঠন নিয়ে পরীক্ষা চালাতে গিয়েই তথ্যটি আবিষ্কার হয়।

অবশ্য ভূমিকম্পের সঙ্গে লন্ডন শহরের সাক্ষাৎ আগেও ঘটেছে। আজ থেকে দশ বছর আগে ২০০৮ সালে ৫ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল শহরটি। লন্ডনবাসীদের জন্য গত ২৫ বছরের মধ্যে যে অভিজ্ঞতা ছিল মনে রাখার মতো!